মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

৩ হাজার পিচ ইয়াবা টেবলেট পাচারের মামলায় ২ জন আসামীকে ৫ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড, একইসাথে প্রত্যেকে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৩ মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (১০ জুলাই) কক্সবাজারের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আবদুল্লাহ আল মামুন এ রায় ঘোষণা করেন। একই আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশেক ইলাহী শাহজাহান নুরী এ তথ্য জানিয়েছেন।

দন্ডিত আসামীরা হচ্ছে-কক্সবাজারের রামু উপজেলার রাজারকুল ইউনিয়নের দেয়াংপাড়ার আবু তাহের ও আয়েশা বেগমের পুত্র মোঃ সেলিম এবং একই ইউনিয়নের নয়াপাড়ার মৃত জাফর আলম ও ফাতেমা বেগমের পুত্র মোঃ জাবেদ। রায় ঘোষণার সময় দন্ডিত আসামীদ্বয় আদলাতে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্র পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন একই আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট ফখরুল ইসলাম চৌধুরী গুন্ধু।

২০২২ সালের ১৩ অক্টোবর কক্সবাজারের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের একটি টিম কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রামু বাইপাস চত্বরে এক অভিযান চালিয়ে মোঃ সেলিম এবং মোঃ জাবেদকে আটক করে। পরে তাদের হেফাজত থেকে ৩ হাজার পিচ ইয়াবা টেবলেট উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মোঃ নুরুল আলম বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মোঃ সেলিম এবং মোঃ জাবেদকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। যার জিআর মামলা নম্বর : ৫৪৬/২০২২ ইংরেজি (রামু থানা)।

মামলাটি বিচারের জন্য কক্সবাজার সিজেএম আদালতে ২০২৩ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারী চার্জ (অভিযোগ) গঠন করে ৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামী পক্ষে তাদের জেরা, আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষার ফলাফল পর্যালোচনা, আসামীকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ মামলার সকল বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে বুধবার রায় প্রচারের দিন ধার্য্য করা হয়। রায় প্রচারের দিনে কক্সবাজারের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মামুন ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) এর ১০(খ) ধারায় দোষী সাব্যস্থ করে আসামী মোঃ সেলিম এবং মোঃ জাবেদকে ৫ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড, একইসাথে প্রত্যেকে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৩ মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। দন্ডিত আসামীদ্বয়কে সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে বলে কক্সবাজার সিজেএম আদালতের বেঞ্চ সহকারী শহীদুল ইসলাম জানিয়েছেন।

রায় ঘোষণার পর রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট ফখরুল ইসলাম চৌধুরী গুন্ধু এ রায় সম্পর্কে বলেন, আদালতে মামলাটির সাক্ষ্য প্রমাণ, তথ্য উপাত্ত উত্থাপন করে আসামীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ রাষ্ট্র পক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। আদালতের এ রায়ে রাষ্ট্র পক্ষ সন্তুষ্ট। তিনি জানান, চার্জ (অভিযোগ) গঠনের মাত্র এক বছর ৪ মাস ১৪ দিনের মধ্যে মামলাটির রায় ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আদালতে অবকাঠামোগত ও জনবল সমস্যা, লজিস্টিক সংকট সহ আরো বিভিন্ন সমস্যা থাকা সত্বেও সিজেএম আদালতের আওতাধীন মাদকের মামলা সহ চাঞ্চল্যকর মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তিতে আদালত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নিয়েছে। যা বিজ্ঞ বিচারক সহ সংশ্লিষ্ট সকলের নিঃসন্দেহে আন্তরিকতা ও দায়িত্বশীলতার বহিঃপ্রকাশ বলে অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট ফখরুল ইসলাম চৌধুরী গুন্ধু মন্তব্য করেছেন।